স্টাফ রিপোর্টার:
কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসে গ্রামের স্বল্প আয়ের মানুষেরা। বিনা খরচ বা স্বল্প খরচে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হতেই কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নেয় গ্রামের মানুষ। কিন্তু বন্দর উপজেলার দাসের গাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা উল্টো এই কমিউনিটি ক্লিনিক থেকেই আরো বেশি অসুস্থ্য হওয়ার ঝুকিতে রয়েছে। কারন ক্লিনিকটির দেয়াল ঘেষেই গত ১০ বছর যাবত গরুর খামার পরিচালনা করছেন বুলবুল নামের এক ব্যক্তি। যার ফলে গরুর গোমূত্র ও ময়লা আবর্জনার গন্ধের কমিউনিটি ক্লিনিকের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ আর রোগজীবানুতে সুস্থ্য হতে সেবা নিতে আসা রোগীরা আরো বেশি অসুস্থ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।
মঙ্গলবার ১৯ মার্চ সকালে সরেজমিনে দাসের গাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে ক্লিনিকের জায়গার ভেতরে দেয়াল ঘেষে গরুর খামার করা বুলবুল আহমেদের দাবী, ক্লিনিকের জায়গা তো আমরা দিয়েছি। এখানে গরু রাখলে সমস্যা কি। এই বিষয়টি নিয়ে এত বাড়াবাড়ি করার কি হলো। আর পরিবেশ দুষন হচ্ছে প্রশ্ন করলে তিনি কিছুই করার নেই বলে জানান।
কমিউনিটি ক্লিনিক সূত্রে জানা যায়, মুছাপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দাসের গাঁও এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের জন্য ওই এলাকার মৃত জজ মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে জমি দান করা হয়। সেখানে সরকারি অর্থায়নে ভবনটির নির্মাণ করে ক্লিনিকটি স্থানীয় জনসাধারণের জন্য স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। কিন্তু মৃত জজ মিয়ার ছেলে বুলবুল আহমেদ দীর্ঘ ১০ মাস যাবৎ জোরপূর্বক ক্লিনিকের জায়গার ভেতরের দেয়াল ঘেষে গরুর খামার দেয়ার কারণে পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। ক্লিনিকের পক্ষ থেকে বার বার আপত্তি দেওয়া সত্বেও কোন কর্নপাত করছেনা বুলবুল আহমেদ।
এ ব্যাপারে ক্লিনিকের সিএইচসিপি ইসরাত জেরিন হুমা জানান, জমি দাতা জজ মিয়ার ছোট ছেলে বুলবুল আহমেদ ২ মাসের জন্য গরু রাখবে বলে দীর্ঘ ১০ মাস যাবৎ গরু রাখছে। সেবা নিতে আসা রোগীরা ময়লার দুর্গন্ধের কারণে ক্লিনিকে এসে অস্বস্থিবোধ করেন। তাছাড়া দুর্গন্ধের কারণে সকাল ৯ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত এখানে রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে আমরা নিজেরাই অসুস্থ্য হয়ে পড়ি।
তিনি আরও জানান, গত ১৩ মার্চ বিকেলে বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার সরেজমিনে এসে দেখে গেছেন। এবং তিনি বলেছেন এখানে যেহেতু দুর্গন্ধ আসে এগুলো সরানো দরকার, দেখি কী করা যায় বলে জানান।
অপর দিকে, দাসের গাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকের জায়গায় গরুর খামার করায় বুলবুল আহমেদ এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য গত ১৩ মার্চ মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন এর বরাবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ড. মু. বেলায়েত হোসেন।
বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. মু. বেলায়েত হোসেন জানান, তিনি দীর্ঘ ১০ মাস যাবৎ ক্লিনিকের জায়গায় গরুর খামার দিয়ে রেখেছেন। আমি বিষয়টি নিয়ে সিভিল সার্জন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। আমি আজকে দাসের গাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকে সরেজমিনে গিয়েছি, আগামীকাল উপজেলা মিটিং আছে সেখানে বিষয়টি আমি উল্লেখ করবো।
এ বিষয় বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম. এ. মুহাইমিন আল জিহান সংবাদচর্চাকে জানান, এটা কমিউনিটি ক্লিনিক এর জন্য আলাদা দপ্তর আছে। তবে যদি আমার কাছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে লিখিত অভিযোগ আসে তবে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো।